২২ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৫৬ পূর্বাহ্ন, ৩০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শনিবার, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে বিএনপির মনোনয়নকে ঘিরে সুবাতাস বানারীপাড়ায় ভূমিকম্পে মুহুর্তে বসতবাড়ি সন্ধ্যা নদী গর্ভে বিলীণ ছারছীনার পীর সাহেব হুজুরের বরিশাল আগমন উপলক্ষে আগামীকাল শনিবার ঈছালে ছওয়াব ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় উদ্ধার হওয়া তিনটি তক্ষক বনায়ন ও নার্সারি এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের বাগানে অবমুক্ত ফাতেমা জোহরা আদিবার আন্তর্জাতিক সাফল্য; অস্ট্রেলিয়ার নিবন্ধিত আর্কিটেক্ট স্ত্রীকে নির্যাতনের মামলায় বরগুনার শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রবিউল হত্যা মামলায় নিরপরাধদের জড়ানোর অভিযোগে বাবুগঞ্জে বিএনপি’র একাংশের সংবাদ সম্মেলন বাবুগঞ্জের ছাত্রদল নেতার খুনিদের গ্রেপ্তার পরবর্তী দৃষ্টান্ত ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ চুয়াডাঙ্গায় ৩ তক্ষকসহ গ্রেফতার ১জন বাবুগঞ্জ এলজিইডি’র এলসিএস কমিউনিটি অর্গানাইজার সানজিদার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার ও হয়রানির অভিযোগ
পড়নে কাপড় ও নেই স্ত্রী ওড়না পড়েন স্বামী। আজকের ক্রাইম-নিউজ

পড়নে কাপড় ও নেই স্ত্রী ওড়না পড়েন স্বামী। আজকের ক্রাইম-নিউজ

আজকের ক্রাইম ডেক্স
পটুয়াখালী: স্বামী-স্ত্রী দু’জনই ভিক্ষা করেন। তবে স্বামী প্রায় অচল।

স্ত্রী ভিক্ষা করে মানুষের বাসার পান্তা ভাত এনে সেই ভাত রোদে শুকিয়ে চালের মতো শক্ত হলে তা আবার রান্না করে খেয়ে জীবন বাঁচান তারা।
যাদের ভাতের অভাব, তাদের নতুন পোশাকের প্রশ্নই আসেনা।তাই লুঙ্গির অভাবে বৌয়ের ওড়না পরেন স্বামী। তাও মানুষের পুরান কাপড়।

এভাবেই জীবন চলছে পটুয়াখালী শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রথম লেন বোহালগাছিয়া এলাকার পঁচানব্বই উর্ধ্বো সুলতান ডাক্তার ও সত্তর উর্ধ্বো সকিনা বেগম ভিক্ষুক দম্পতির।
সদর উপজেলার আউলিয়াপুর এলাকার বাসিন্দা মৃত গ্রাম ডাক্তার ইবরাহীম আকনের এক ছেলে মোছলেম ডাক্তার।

মোছলেম ডাক্তারের একমাত্র ছেলে সুলতান। মোছলেম ডাক্তার এক পালের নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
পারিবারিকভাবে মোছলেম ডাক্তারের ছেলে সুলতান ও একই এলাকার বাসিন্দা ডাক্তার নূর মোহাম্মদের মেয়ে সকিনা বেগমের বিয়ে হয়। এই দম্পতির ঘর আলো করে পৃথিবীতে আসে দুই ছেলে মোস্তফা ও মোশাররফ।

বৃদ্ধ সুলতান ডাক্তার বলেন, ‘করোনার কারণে তিন মাস ঘর থেকে নামতে পারি নাই। করোনার মধ্যে আল্লাহ চালাইছে চলছি। মানুষ কিছু দিয়েছে তা দিয়ে চলছি। এখন মানুষের কাছে ভিক্ষার জন্য গেলে দুই টাকা দিলে এক টাকা ফেরত চায়। কাজ করতে পারি না কিন্তু প্রতিদিন ৪০ টাকার ওষুধ খাওয়া লাগে। ওষুধ না খেলে বিছানা থেকে ওঠা দায়। বৌরে খেটে খাওয়ানোর কথা ছিলো আমার কিন্তু এখন বৌ আমাকে ভিক্ষা করে খাওয়ায়। ’

তিনি বলেন, দুই বেলা ভাত খাওয়ার টাকা নাই তার মধ্যে লুঙ্গি কিনমু কেমনে? আমার পরার মতো লুঙ্গি নাই। পুরান যে লুঙ্গি আছে তাও সব জায়গা দিয়ে ছেড়া। তাই ঘরে বৌয়ের ওড়না পড়ে থাকি। আমরা যে ঘরে থাকি সে বাসা মুন্সিবাড়ির জব্বার দারোগার। বাসায় ১০০ টাকার বিনিময়ে থাকি। তিনি অনেক ভালো মানুষ তাই আমাদের কষ্ট দেখে এখানে থাকতে দিয়েছেন। ঘরে কোনো বিদ্যুৎ নাই। বৃষ্টির দিনেও পানি পড়ে।

সুলতান যোগ করে বলেন, দুটি ছেলে আছে আমার। ওরা ঢাকায় রিকশা চালায়। তবে যতটুকু জানি, রিকশা চালিয়ে ওরা নিজেদেরই পরিবারই ঠিকমতো চালাতে পারে না, আমাদের দেখবে কি!

তার স্ত্রী সকিনা বেগম বলেন, ‘আমরা ভিক্ষা করে খাই। বয়সের সময় স্বামী বড় গাড়ি চালাইছে। তখন সুখের দিন ছিলো। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এখন আর কোনো কাজ করতে পারেন না। আমি ভিক্ষা করে যা পাই তা দিয়ে ওষুধ কিনতে চলে যায়। সরকারি কোনো সহায়তা পাই না। বয়স্ক ভাতার জন্য মেম্বার (পটুয়াখালী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নিজাম উদ্দিন) অনেক আগে নাম নিয়েছে। কিন্তু এখনও বয়স্ক ভাতার কোনো খবর নেই।

বর্তমানে কেমন কাটছে দিন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মানুষের বাসা থেকে পানি ভাত ভিক্ষা করে এনে সেই ভাত শুকাই। শুকানোর পর ভাত যখন চাল হয় তখন সেই চাল আবার রান্না করে আমরা খাই। মানুষের বাসার একদিনের তরকারি না ফালাইয়া আমাদের দেয় আমরা তা জ্বাল দিয়ে লাল হলে সেটা খাই। ’

এমন খাবার কেন খান প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাবা চাল ও তরকারি কেনার টাকা নাই। ভিক্ষা করে যে টাকা পাই তা দিয়ে কেরসিন, বুড়া-বুড়ির ওষুধ আর ঘর ভাড়ার পিছনে চলে যায়। সরকার থেকে আমাদের যদি একটু ভাতার ব্যবস্থা করতো। জীবনের শেষ সময়টা যদি একটু ভালোভাবে খেতে পারতাম, চলতে পারতাম। ’

এ বিষয়ে কথা বলতে পটুয়াখালী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নিজাম উদ্দিন মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019